District Laxmipur
পিছিয়ে থাকার সময় অনেক আগেই শেষ হয়েছে। তাইতো হাটি হাটি পা পা করে আজ একজন সফল উদ্যোক্তা। তবে সফল উদ্যোক্তার পিছনে রয়েছে শ্রম, মেধা এবং আনন্দ সুখের অনেক কাব্য। তারুন্যরা দেশের সম্পদ। এ তরুন বয়সে চাকরি নামক সোনার হরিনের পেছনে পেছনে ছুটতে গিয়ে বেকারের খাতায় নাম লেখাই। তখন দেশের সম্পদ না হয়ে, হয়ে উঠি দেশের বোঝা। তখনি ভাবলাম নিজ থেকে কিছু করতে হবে। আমাদের পরিবারে আমরা আট ভাই বোন। তার মধ্যে আমি ছিলাম পরিবারের মেঝ ছেলে, পরিবারের দায়িত্ব কিছুটা হলেও আমার উপর এসে ভর করে। অভিভাবকদের মতামতকে প্রাধ্যনা না দিয়ে ভাবতে থাকি নিজ থেকে কিছু করার। প্রযুক্তিগত জ্ঞাণ আহরনের উপর শখ থাকার কারণে প্রযুক্তিগত জ্ঞাণ আহরন করি। এরপর থেকে শুরু হয় কিছু একটা করার জন্য চেষ্টা। ২০১৯ সালের মাঝের দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন “উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প” সর্ম্পকে জানতে পারি ও নিবন্ধন করি। প্রথম ব্যাচেই প্রশক্ষিণ গ্রহণের সুযোগ পাই। বড় প্রতিষ্ঠান করার ব্যাপারে নিজ অভিজ্ঞতা এবং গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকারের, প্রধানমন্ত্রির কার্যালয় নিয়ন্ত্রানাধীন “উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প” থেকে ট্রেনিং প্রাপ্ত হয়ে গড়ে তোলি “ক্লাসি টেকনিক্যাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট” যার মধ্যে জড়িয়ে রয়েছে আমার সকল স্বপ্ন। সব সময় ভাবতাম বড় কিছু করার সেই ভাবনা থেকেই লক্ষ্মীপুর সদরে গড়ে তোলি ক্লাসি টেকনিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট। বড় কিছু করার জন্য প্রয়োজন হয় বড় অংকের অর্থের এবং ব্যবসা সংক্রান্ত জ্ঞান। “ক্লাসি টেকনিক্যাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট” আজ সকলের কাছে এক আস্থার নাম। এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বেকার যুব সমাজকে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তুলে দেশের সম্পদ হিসেব কাজে লাগানোই আমার মূল লক্ষ্য। বর্তমানে আমার প্রতষ্ঠিানে ৫-৬ জনের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে আমি আশা করি এ সংখ্যা আগামী কয়কে বছরে ৭০-৮০ তে পৌছাবে। আল্লাহ তায়ালার উপর পূর্ণ আস্থা এবং সকলের সহযোগিতাই আমার মূল ভরসা।
মো:মোশারফ হোসেন
ব্যাচ-০১
রেজিষ্ট্রেশন নম্বর: ৫১০০৮২

আমি একজন নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। নানাবিধ সমন্বয়হীনতা ও অর্থনৈতিক সমস্যার মাঝেও পিতা-মাতার প্রত্যক্ষ সমর্থনে চট্রগ্রাম পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউটে ইলেকট্রনিক্সে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করি। তারপর চাকুরিরত অবস্থায় ADUST UNIVERSITY থেকে B.Sc in (EEE ) ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করা হয়। ডিপ্লোমা শেষ করার পর নিজে ব্যবসা করবো এই ধরনের মনমানুষিকতা তৈরি হয়। B.Sc ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে চট্রগ্রামে কিছু মাস চাকুরী করার সময় সৃজনশীল কিছু ব্যবসা করার তাড়না অনুভব করি। উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ী হিসেবে কিছু করার ধারণা মাথায় জেঁকে বসে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে অর্থনৈতিক, তারপরও CREATIVE কিছু ব্যবসা নিয়ে কয়েক মাস চিন্তা করি। আমার এক বন্ধু মোঃ এনায়েত করীম কে সাথে নিয়ে আমরা অন্যান্য ব্যবসা নিয়েও চিন্তা করি। তখন আমাদের মাথায় আসে এমন কিছু করবো যাহার মাধ্যমে দেশের উপকার হবে এবং কিছু মানুষের কর্মসংস্থান হবে এবং নিজেও অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হতে পারি। আমাদের উদ্দেশ্য হবে GREEN HOUSE সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা এবং GREEN HOUSE EFFICT থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করা। সারা বাংলাদেশে যখন উদ্যোক্তা তৈরি করার জন্য BIDA এর মাধ্যমে বর্তমান সরকার উৎসাহ, পরামর্শ দেওয়ার জন্য ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করে তখন প্রত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারি বাংলাদেশের প্রত্যেক জেলায় BIDA এর প্রকল্প ”উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প”এর অফিস আছে। তাই আমি তাৎক্ষনিক আবেদন করি এবং লক্ষীপুর জেলা অফিসে এক মাসের একটা ট্রেনিং করি। যার মাধ্যমে আমি বিভিন্ন সরকারি অফিস, তাদের কাজকর্ম, আইন, পণ্যের মান নিয়ন্ত্রনকারী সংস্থা ও তাদের কাজ সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারি এবং উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য উৎসাহ পাই। আমাদের লক্ষীপুর জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক স্যার আমাদেরকে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য সর্বাত্বক সহযোগিতা করেছেন এবং ”উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প” লক্ষীপুর অফিস ও প্রশিক্ষণ সমন্বয়ক স্যার সর্বাত্বক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। এরই দারাবাহীকতায় আমরা শুরু করি প্লাস্টিক রিসাইক্লিং এর কাজ। যার উৎপাদিত পণ্য হচ্ছে রেজিন তৈরী করা। তবে বর্তমানে আমরা প্লাস্টিকের বোতলকে বেলিং করি। আমাদের কারখানা বর্তমানে লাভজনক অবস্থায় আছে। আমি নিজেই এই কারখানা পরিচালনা করি। এর সাথে সাথে আমরা একটা মর্ডান ইলেকট্রিক শপ এর শো- রুম দিয়েছি এবং আমরা সারা বাংলাদেশে INDUSTRIAL EQUIPMENT SALE করি TECH SOULD BD. নামে আমাদের একটা FACEBOOK PAGE আছে। আমাদের কারখানা এবং শপ মিলে মোট ১৫ জন কর্মকর্তা কাজ করে। যাদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা খুব ভালো ভাবে দিয়ে থাকি। বর্তমানে আমার এলাকায় অনেক তরুণ আমার উদ্যোগে উদ্যোগি হয়ে অন্যান্য কাজ/ব্যাবসা করার জন্য উৎসাহ পাচ্ছে।
সাফল্যঃ
বর্তমানে আমার কারখানা ১টা বেলিং মেশিন এবং ১৫ জন শ্রমিক আছে যারা নিরলশ ভাবে কাজ করে। কারখানা স্থাপনের কয়েক মাস পর আমি একটা ইলেকট্রিক শপ দিয়েছি এবং আমরা সারা বাংলাদেশে ONLINE এ INDUSTRIAL EQUIPMENT SALE করি। আমাদের একটা FACEBOOK PAGE আছে যার নাম TECH SOULD BD। ইতিমধ্যে আমাদের এলাকার কিছু প্রাথমিক উদ্যোক্তা আমাদের উদ্যোগে উদ্যোগি হয়ে ব্যাবসা করার চিন্তা করছেন।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাঃ
- ভবিষৎতে আমার এই কারখানা কে INDUSTRY তে রুপান্তর করা।
- এলাকার বেকার যুবক-যুবতীদের নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কার্যকারী ভূমিকা রাখা এবং আরো অধিক নতুন নতুন সেবা যুক্ত করা।
- আমার ইলেকট্রিক শপ কে অধিক শাখায় রুপান্তর করা।
- TECH SOULD BD এর অধিনে সারা দেশে INDUSTRIAL EQUIPMENT বিক্রি আরো বেশি জোরদার করা।
- আরো কিছু প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত করে নিজের এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন গঠনে।
পরিশেষেঃ
পরিশেষে বলবো বিশ্ব অর্থনীতিতে অবদান রাখার জন্য তারুন্যের বিকল্প নেই। আগামীর বাংলাদেশ তারুন্যের বাংলাদেশ। নিজেকে একের অধিক কাজে ব্যস্ত রাখতে হবে। ”উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প” এর মত জায়গা থেকে প্রশিক্ষণ নিতে পারলে সেটা আরো ভালো হরে। আপনি যাহা করবেন তার উপর সঠিক জ্ঞান থাকতে হবে, কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, লেগে থাকতে হবে এবং সততা থাকতে হবে। ইনশা-আল্লাহ আমরা এগিয়ে যাবো।
মোঃ আজাদ হোসাইন
ব্যাচঃ ০১
রেজিস্ট্রেশান নংঃ ৫১০০৮৬